নিশাত তাসনিম আনিকা, মাহির ফারহান খান, তানজিম-উল-ইসলাম ব্যাংকখাতের সমস্যা সমাধান করা প্রয়োজন নিশাত তাসনিম আনিকা গত রবিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে প্রাকবাজেট আলোচনায় সরকারের কাছে আগামী বাজেটে ব্যাংকখাতের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার দিক-নির্দেশনা চেয়েছে ব্যবসায়ীদের অন্যতম সংগঠন মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এমসিসিআই)। এমসিসিআই সভাপতি নিহাদ কবিরের মতে, চলমান তারল্য সঙ্কট থেকে ব্যাংকগুলোকে উত্তরণ ঘটাতে এবারের বাজেটে ব্যাংক খাতের প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে। বাজেটে দেশীয় শিল্পের সুরক্ষার সুপারিশ জানিয়ে সংগঠনটি বলেছে যে, স্থানীয় শিল্প সমূহযে কর বৈষম্যের মুখোমুখি হয়, তা দূর করতে মৌলিক কাঁচামাল ও মধ্যম পণ্যের ওপর কর হ্রাস করা হলে তাতে দেশীয় শিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতাও বাড়বে। এক্ষেত্রে আগামী বাজেটে দেশীয় শিল্পের সুরক্ষার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া।এছাড়া কর আদায় বাড়াতে কর নিরূপণ ও নেওয়ার ক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি চালু এবং কোম্পানির লভ্যাংশের উপর করের হার এক স্তরের করতেও আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। মঈনুদ্দিন বলেন, “বর্তমানে ব্যক্তিকরদাতার জন্য সর্বোচ্চ আয়কর হচ্ছে ৩০ শতাংশ। চেম্বারকর হ্রাসের দাবি করে এলেও রাজস্ব বোর্ড তার পরিবর্তে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশে উন্নীত করেছে। এই সামান্য হ্রাস ব্যক্তি করদাতাদের ক্ষেত্রে তাদের সত্যিকার আয় প্রকাশে উৎসাহিত করবে এবং কর ফাঁকি অনেকাংশে হ্রাস পাবে।" তিনি আরও বলেন, “ভৌত অবকাঠামোগত দুর্বলতা, গ্যাসও বিদ্যুতের স্বল্পতা শিল্পোন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসডিজি অর্জনের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হলে উদ্ভাবন ও প্রযুক্তির উন্নয়নে এনবিআরের সমর্থন যোগাতে হবে।” রেকর্ড ৭.৬৫% প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন মাহির ফারহান খান গত দুই অর্থ বছরের ধারাবাহিকতায় চলতি অর্থ বছরেও বছরেও দেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার সাত শতাংশের উপরে থাকছে। এই অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার ৭.৪ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য থাকলেও পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রাক্কলন অনুযায়ী সেই হার লক্ষ্য মাত্রা ছাড়িয়ে হতে চলেছে ৭.৬৫ শতাংশ। মূলত রপ্তানি বাণিজ্য, রেমিট্যান্স আর রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি জিডিপি প্রবৃদ্ধির গতি বাড়িয়েছে। এই প্রাক্কলন অনুযায়ী চলতি অর্থ বছর শেষে দেশের জিডিপি দাঁড়াবে ২৭৫ বিলিয়ন ডলারে যা আগের বছর ছিল ২৪৮.৭৭ বিলিয়ন ডলার। এবং মানুষের মাথাপিছু আয় দাঁড়াবে ১৭৫২ ডলারে। প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির সুফল কোথায়? তানজিম ইসলাম ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয় ‘স্টেট অফ দ্য বাংলাদেশ ইকোনমি ইন ২০১৭-১৮’। এইআলোচনায় সিপিডির সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য বলেন, “সরকারের হিসাব থেকে আমরা দেখছি প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। পাশাপাশি আমরা দেখছি, দেশের সাধারণ মানুষের প্রকৃত আয় কমে গেছে।” সিপিডির গবেষণায় আরও বের হয়ে এসেছে যে মানুষের প্রকৃত আয় কমে যাওয়ার পাশাপাশি বৈষম্যও বেড়েছে। এ বিষয়ে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য আরও বলেন, “প্রবৃদ্ধি দিয়ে তো আমাদের কিছু হবে না। প্রবৃদ্ধির হার নিয়ে আমরা তর্ক-বিতর্ক করতে পারি, কিন্তু তার চেয়েও বড় বিষয় হচ্ছে, এর ফলাফলটা কী? আসল কথা হচ্ছে কর্মসংস্থান হল কি না, আয় হল কি না।” দেবপ্রিয় বিনিয়োগের অচলাবস্থার বিষয়টিও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ গত তিন বছর যাবত প্রায় একই জায়গাতে স্থবির হয়ে আছে।” গত দুই অর্থবছর ধরে সরকারি বিনিয়োগের ফলে প্রবৃদ্ধির হার ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। এর পূর্বে প্রায় এক দশক ৬ শতাংশের বৃত্তে প্রবৃদ্ধির হার আটকে ছিল। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে তা ৭ শতাংশ অতিক্রম করে।
0 Comments
Leave a Reply. |
Send your articles to: |