ফারহা তাসনীম, তাকরিম হোসেন, মোঃ রাকিবুল মবিন ও লুবাবা মেহজাবিন প্রিমা, ইনজামামুল হক খান আলভী
আগামী বাজেটে বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি, আইটি সহ একাধিক খাতে উদ্যোক্তাদের ১০-৯০% কর মওকুফের সুযোগ দেওয়ার চিন্তা করছে সরকার। এ বছরের জুলাই থেকে শুরু করে ২০৩০ সালের জুন পর্যন্ত এই সুবিধা থাকতে পারে। এই সকল খাতের উন্নয়ন, উৎপাদন বৃদ্ধি ও দেশের সামগ্রিক রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আনতে এই উদ্যোগ সহায়তা করবে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। আসন্ন বাজেটে ভর্তুকি,প্রণোদনা ও বিভিন্ন সংস্থাকে ঋণ দেওয়ার জন্যে ৪৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে; এরমধ্যে কৃষি খাতে সর্বোচ্চ সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা, বিদ্যুতে ভর্তুকি ৯ হাজার কোটি টাকা ও খাদ্যে ৬ হাজার কোটি ভর্তুকি থাকবে। অপরদিকে, আগামী বাজেটেও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকছে। অবৈধ সম্পদকে মূল অর্থনীতিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য এই পদক্ষেপ জরুরী বলে মনে করছে সরকার। ২১শে মে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার মাধ্যমে সাময়িক বিরতি ঘটলো ইসরাইল-ফিলিস্তিন মধ্যকার নতুন দ্বন্দ্বের যা শুরু হয়েছিল পশ্চিম তীরে শেখ জাররাহে ফিলিস্তিনি বসতি উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে। ৬৬ শিশুসহ ২৫৬ জন ফিলিস্তিনি এবং ১টি শিশুসহ ১৩ জন ইসরাইলি নিহত হয়েছেন। ইসরাইলের রিপোর্ট অনুসারে ১২ মে পর্যন্ত প্রায় ২০০ জন ইসরাইলি আহত হওয়ার খবর জানা যায়। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের রিপোর্ট অনুসারে ১২ মে পর্যন্ত ১৯০০ এরও বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন এবং ১৯ মে পর্যন্ত প্রায় ৭২,০০০ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। গাজা থেকে ইসরাইলের দিকে প্রায় ৪,৩৬০টি রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছিল। ইসরাইল গাজার ওপর প্রায় ১৫০০ স্থল, বিমান ও সমুদ্র হামলা চালিয়েছে। ১৩ই মে হামাস প্রথম যুদ্ধবিরতির ডাক দেয় যা ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। ১৮ই মে মিশর ও জর্দান সহ ফ্রান্স যুদ্ধবিরতির জন্যে জাতিসংঘের সিকিউরিটি কাউন্সিলে প্রস্তাব দায়ের করার ঘোষণা করে এবং ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। গত ২৬ মে পশ্চিমবঙ্গ এবং উড়িষ্যার উপকূলে আঘাত হানে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’। বাংলাদেশের উপকূল অঞ্চলে এই ঝড় আঘাত না হানলেও ঘূর্ণিঝড়ে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাস এবং প্রবল স্রোতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সুন্দরবন অঞ্চল। ঝড় বৃষ্টিতে বনবিভাগের ওয়াচ টাওয়ার, জলযান, ২৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ, রাস্তাঘাট ইত্যাদির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জোয়ারের পানিতে ডুবে অন্তত চারটি হরিণের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া সুপেয় পানির সংস্থানে প্রবেশ করেছে স্রোতের সাথে আসা নোনা পানি। ধারণা করা হচ্ছে ঘূর্ণিঝড়ে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের অন্তত ৬০ লক্ষ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান জানিয়েছেন, প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের জিডিপি ২৭,৯৬,৩৫৮ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৩০,৮৭,৩০০ কোটি টাকা হয়েছে। অপরদিকে, দেশের মাথাপিছু বার্ষিক আয় ২০৬৪ ডলার থেকে বেড়ে ২২২৭ ডলার হয়েছে, যা প্রায় ১,৮৮,৮৭৩ টাকার সমান। এ হিসেবে মাথাপিছু আয় বেড়েছে ১৬৩ ডলার, আগের বার থেকে যা ৯ শতাংশ বেশি। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে শ্রীলঙ্কাকে ২০০ মিলিয়ন ডলার ধার দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই চুক্তির মাধ্যমে প্রথমবারের মত কারেন্সি সোয়্যাপে দাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হল বাংলাদেশ। করোনা মহামারীর পর থেকে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে শ্রীলঙ্কার বাণিজ্য ঘাটতি এবং বৈদেশিক ঋণ, যা এই বছরে পরিণত হয় ৩.৭ বিলিয়ন ডলারে। শ্রীলঙ্কার অন্যতম প্রধান বাণিজ্য খাত পর্যটন ২০১৯ এর ইস্টার সানডের সন্ত্রাসী বোমা হামলার পর থেকে আবেদনহীন হয়ে পড়েছে। সেই সাথে করোনাকালীন সময়ে রপ্তানি বাণিজ্য কমেছে ১৭ শতাংশ। অন্যদিকে এপ্রিলের শেষে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রথমবারের মত ৪৫ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক স্পর্শ করেছে। উল্লেখ্য, ঋণ গ্রহণের জন্যে শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ২০০ মিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ শ্রীলঙ্কান রূপি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভে জমা রাখতে হবে। লন্ডন ইন্টারব্যাংক অফার রেট (লাইবর) অনুযায়ী চুক্তির সুদের হার নির্ধারণ করা হয়েছে। এই ঋণ পরিশোধের সময়সীমা তিন মাস। তিনমাসে পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে চুক্তি অনুযায়ী বাড়বে সুদের হার। দেশজুড়ে পাঁচ দিনব্যাপী বিক্ষোভের পর কলম্বিয়ার রাষ্ট্রপতি আইভান ডিউক এই মাসের শুরুতে একটি বিতর্কিত কর সংস্কার বিল প্রত্যাহার করেন। সরকার কর্তৃক মধ্য ও নিম্নবিত্তদের উপর করবৃদ্ধির প্রস্তাবনার বিরুদ্ধে দেশটিতে ছড়িয়ে পড়া সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৭ জন নিহত এবং ৮শ’র বেশি আহত হয়। তবে কর বৃদ্ধির প্রস্তাব প্রত্যাহারের পরেও বন্ধ হয়নি বিক্ষোভ। বরং পুলিশি সহিংসতা,দারিদ্র্য এবং দেশটির স্বাস্থ্য সঙ্কটকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ নতুন মোড় নেয়। কলম্বিয়ার শহর ক্যালিতে চলাকালীন এই বিক্ষোভে শুক্রবার ২৮ মে সকালে সংঘর্ষের ঘটনায় ১০ জন নিহত হয়েছে। এশিয়ায় কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাব, বিশ্ব সরবরাহ শৃঙ্খলকে আঘাত হেনে মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি বাড়িয়ে তুলতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ফলে ফেডারেল রিজার্ভ, প্রত্যাশার থেকে শীঘ্রই বিনিয়োগে সুদের হার বাড়িয়ে দিতে পারে যা বিনিয়োগকারীদের দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। এই এপ্রিলে মার্কিন ভোক্তা মুল্য সূচক গত এক বছরে ৪.২% বৃদ্ধি পেয়েছে যা ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসের পর সর্বোচ্চ। মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ আগেও বলেছে যে এসময়ে মুদ্রাস্ফীতির যেকোনো প্রভাবই সাময়িক হবে যেহেতু এটি গত বছরের মহামারি-অর্থনীতির সাথে তুলনা করা এবং ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা আর্থিক নীতি শিথিল রাখবে।
0 Comments
Leave a Reply. |